আজ থেকে জেলার ভেতরে চলবে গণপরিবহন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা মহানগরসহ সব জেলা শহরের সড়কে গণপরিবহন চলাচল করবে। সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ২১ দিন বন্ধ থাকার পর জেলার সড়কে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। তবে সরকারি নির্দেশনার আলোকে আজ (৬ মে) থেকে জেলায় গণপরিবহন চালু হচ্ছে। এক্ষেত্রে এতদিন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা আর থাকছে না। তবে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের। এছাড়া গণপরিবহনের মোট আসনের অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহন করতে হবে।

এদিকে বুধবার (৫ মে) ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি নিয়ম মেনে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সব জেলায় বাস চালুর ঘোষণা দিয়েছে।

ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে বিধিনিষেধে বন্ধ থাকা বাস ও মিনিবাস বৃহস্পতিবার ভোর থেকে চালানোর জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বাস ও মিনিবাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ চালকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সড়কে গাড়ি নামানোর জন্য এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির তথ্য অনুসারে, ঢাকায় প্রায় ছয় হাজার বাস ও মিনিবাস চলাচল করে। ঈদের কেনাকাটা সারতে বাস ও মিনিবাস ব্যবহার করতে না পেরে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। যাত্রীরা আশা করছেন, সড়কে শৃঙ্খলা থাকলে পরিবহন সংকট হবে না।

বুধবার রাতে মিরপুর-১১ নম্বরে শিকড় পরিবহনের চালক মো. বাবুল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বাস বন্ধ রাখতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস চালাতে পারব জেনে একটু ভালো লাগছে।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জানিয়েছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা মহানগরসহ সব জেলা শহরের মধ্যে গণপরিবহন চলাচল করবে। ঢাকা মহানগরে গণপরিবহন চলাচলে সরকারের নির্দেশনা মেনে রুট মালিক সমিতি ও পরিবহন কোম্পানির নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দফতর সম্পাদক সামদানী খন্দকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সড়কে গণপরিবহন চলাচল করবে। এক্ষেত্রে মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রীকে গাড়িতে ওঠানো যাবে না। এছাড়া গাড়ির স্টাফদের গাড়ির মালিক মাস্ক সরবরাহ করবেন। গাড়িতে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে হবে। অর্থাৎ দুই আসনের বিপরীতে একজন যাত্রী পরিবহন করতে হবে। মালিক-শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে বলে এক্ষেত্রে রুট মালিক সমিতি ও পরিবহন কোম্পানি জিপির নামে কোনো ধরনের অর্থ গাড়ি থেকে আদায় করতে পারবে না। এই বিষয়গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট রুট মালিক সমিতি ও পরিবহন কোম্পানির নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা মহানগরসহ সব জেলা শহরের মধ্যে গণপরিবহন চালানোর নির্দেশনা মানতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলমান বিধিনিষেধ আরেক দফা বাড়িয়ে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপন অনুসারে, বিধিনিষেধ ৫ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় নতুন কিছু শর্ত আরোপ করা হয়। এতে বলা হয়, সড়কে আন্তঃজেলা গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে ৫ মের পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। তবে ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।